২০২৪ সালে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২০.২ শতাংশ; মাত্র এক বছরে বৃদ্ধি ১১ শতাংশ পয়েন্ট, অর্থনীতিবিদরা বলছেন রাজনৈতিক প্রভাব ও শিথিল নীতিই মূল কারণ।
প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩:৩৫
বাংলাদেশের ব্যাংক খাত আজ এক ভয়াবহ বাস্তবতার মুখোমুখি। খেলাপি ঋণের হার এশিয়ার অন্য সব দেশের তুলনায় এখন সর্বোচ্চ। সম্প্রতি প্রকাশিত এডিবির ননপারফর্মিং লোনস ওয়াচ ইন এশিয়া ২০২৫ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে মোট বিতরণকৃত ঋণের ২০.২ শতাংশ খেলাপি, অঙ্কে যা ২০.২৭ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের তুলনায় এ হার বেড়েছে ২৮ শতাংশ।
এডিবি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার কোথাও এমন ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়নি। প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা সংস্কারমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কমাতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশে পরিস্থিতি উল্টো দিকে গেছে। এমনকি ছোট অর্থনীতি নেপালও খেলাপি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিনের শিথিল নীতি, রাজনৈতিক প্রভাব, পুনঃতফসিলের অপব্যবহার এবং দুর্বল তদারকি ব্যবস্থাই বাংলাদেশকে আজকের এই অচলাবস্থায় ঠেলে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তথ্য প্রকাশ শুরু করেছে, তখন প্রকৃত সংকট স্পষ্ট হয়েছে।
২০২৫ সালের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের প্রায় ৩০ শতাংশ। মাত্র এক বছরে এ ঋণ বেড়েছে ১৫১ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, সংস্কার ছাড়া এই সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। ভারতের মতো সাহসী সংস্কার, কোরিয়ার মতো কঠোর তদারকি এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া বাংলাদেশকে এশিয়ার ‘সবচেয়ে দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা’ হওয়ার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করা সম্ভব নয়।