 
                            প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ৬:০১:৫১
অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ‘ট্রাভেল বিজনেস পোর্টাল’ গ্রাহকের শতকোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে—এমন সংবাদে এরই মধ্যে আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে দেশের পর্যটন খাতে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মঞ্জুরুল আলম ও জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ইমন আলম এরইমধ্যে বিদেশে পালিয়ে গেছেন বলেও গুঞ্জন উঠেছে। এতে চরম বিপদে পড়েছেন গ্রাহকেরা। সেই ভুক্তভোগীদেরই একজন স্বপ্ন ট্যুরের স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদুর রশিদ।
রাজধানীর গুলশানে আজ সোমবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে মাসুদুর রশিদ জানান, গত ২৩ আগস্ট ট্রাভেল বিজনেস পোর্টালের (টিবিপি) স্বত্বাধিকারী মো. মঞ্জুরুল আলম (নয়ন)-এর সঙ্গে তার এয়ার টিকেট বিক্রয় সংক্রান্ত (বিটুবি) একটি চুক্তিনামা স্বাক্ষরিত হয়।
তিনি বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী—গত ২৩ আগস্ট থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত মো. মঞ্জুরুল আলম ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স থেকে যাত্রীদের কাছে এয়ার টিকেট বিক্রি করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মঞ্জুরুল আলম বিক্রয়কৃত টিকেটের মূল্য পরিশোধ না করেই গত ২১ অক্টোবর থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আমাদের পাওনা টাকা না দিয়ে পলাতক আছেন।’
মাসুদুর রশিদ আরও বলেন, ‘মঞ্জুরুল আলমের সঙ্গে ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা যাচ্ছে, তিনি আমাদের পাওনা টাকা না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই পালিয়েছেন। এখন বিক্রয়কৃত টিকেটের মূল্য পরিশোধ না করায় আমরা আর্থিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং অনেক যাত্রী সাধারণও আমাদের মতো ভুক্তভোগী।’
তিনি বলছেন, ‘এয়ার টিকেট ইস্যুর বিপরীতে সর্বমোট ২১ কোটি ৭০ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩৩ টাকা আমরা পাই। এই টাকার মধ্যে পরিশোধকৃত টাকা বাদ দিয়ে আমরা বর্তমানে তার কাছে ১০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী যাত্রীদের যথাযথ প্রমাণসহ যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, ‘ট্রাভেল বিজনেস পোর্টাল’ মূলত বিজনেস-টু-বিজনেস (বিটুবি) ও বিজনেস-টু-কাস্টমার (বিটুসি) দুই মডেলেই কাজ করত। শতাধিক ছোট এজেন্সি তাদের সিস্টেম ব্যবহার করে টিকেট ইস্যু করত।
এক সাব-এজেন্ট বলছেন, ‘আমাদের প্রায় ৩০ লাখ টাকা তাদের পোর্টালে জমা ছিল। সামনে গ্রাহকদের টিকেট ইস্যুর জন্যই এই টাকা রাখা হয়েছিল। এখন সব শেষ। গ্রাহকদের কী বলব জানি না।’
এ ব্যাপারে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান নাগরিক প্রতিদিনকে বলেন, ‘ট্রাভেল এজেন্সির নামে অর্থ আত্মসাতের ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। তবে এর মালিকেরা বিদেশে পালিয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য নেই।’
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা বহুবার সতর্ক করেছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কিছু অসাধু চক্রের কারণে পুরো ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রির ওপর থেকে মানুষের বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।’