আধুনিক নগরের দ্রুত চলা জীবন, তার বিশৃঙ্খলা ও মানুষের মানসিক ক্ষত শহীদ কাদরীর কবিতায় স্পষ্ট প্রতিফলিত।
 
                            প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২৫, ৮:১৮:৫১
শহীদ কাদরীর কবিতা পাঠ করলে সহজেই বোঝা যায়, তিনি নগরের জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে মনোযোগ দিয়ে দেখেন। বস্তির আঁকাবাঁকা গলি, ব্যস্ত রাস্তাঘাট, একাকী মানুষের চিৎকার সবই তার লেখায় স্থান পায়। “নগর শুধু পাথর, ইট আর কংক্রিট নয়; এটি মানুষের বেদনার আয়নাও,” এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি তার কবিতাকে সাধারণ শহুরে বর্ণনার বাইরে নিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কাদরীর কবিতা কেবল স্থানিক নয়; তা সামাজিক ও মানবিক। সাহিত্য সমালোচক ড. রাশিদা রহমান বলেছেন, “শহীদ কাদরীর কবিতায় নগরের হাহাকার ও মানুষের বেদনা এমনভাবে মিশে আছে যে পাঠক তা শুধু অনুভব করেন না, বরং তার সঙ্গে মানসিকভাবে সংযুক্ত হন। এটি স্থানীয় বাস্তবতার সঙ্গে বিশ্বসাহিত্যের সম্পর্কও গড়ে তোলে।” শহীদ কাদরীর কবিতায় অনেক সময় ব্যস্ত শহরের প্রহরগুলো মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়। শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমিক সব বয়সী মানুষের অনুভূতি ও সংগ্রাম তার লেখায় অদৃশ্য সেতু হিসেবে কাজ করে। আন্তর্জাতিক সাহিত্যমাধ্যমেও সমালোচকরা এই দিকটি প্রশংসা করেছেন। যেমন, চিলি বা আর্জেন্টিনার আধুনিক কবিতায় নগরের বাস্তবতা ও ব্যক্তিগত বেদনার সমন্বয় ঘটানো হয়; কাদরীর কাজেও তা পাওয়া যায়।
পাঠকের প্রতিক্রিয়াও ইতিবাচক। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই লিখেছেন, “শহীদ কাদরীর কবিতায় আমরা নিজেদের, আমাদের চারপাশের নগর ও মানুষের বেদনা খুঁজে পাই।” এই অনুভূতি শুধু সাহিত্যপ্রেমী নয়, সাধারণ পাঠককেও তার কবিতার সঙ্গে সংযুক্ত করে।
“নগর শুধু পাথর, ইট আর কংক্রিট নয়; এটি মানুষের বেদনার আয়নাও” শহীদ কাদরী
ফলে, শহীদ কাদরীর কবিতা নগরের চিত্রনাট্য নয়, বরং মানুষের অনুভূতি ও বেদনার প্রতিচ্ছবি। তার লেখার মাধ্যমে পাঠক কেবল শহরের দৃশ্যই দেখেন না, সেই সঙ্গে অনুভব করেন নাগরিক জীবনের ব্যস্ততা, হাহাকার ও মানবিক সংগ্রাম। আধুনিক শহরের কোলাহল ও মানুষের বেদনা সবই তার কবিতায় মিলিয়ে যায় এক মনোমুগ্ধকর অনুরণনে।