অর্থনৈতিক অস্থিরতায় বাধাগ্রস্ত আসবাব রপ্তানি, বন্ড সুবিধার ওপর দৃষ্টি রাখছে শিল্পীরা সাশ্রয়ী বন্ড সুবিধা না পেলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাপট হারাবে বাংলাদেশের আসবাবশিল্প
প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:৪০:২৬
আসবাবশিল্পে বন্ড সুবিধা ছাড়া রপ্তানির পথে বাধা
বাংলাদেশের আসবাবশিল্প দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের কাছে ব্যাপক চাহিদার মধ্যে থাকা সত্ত্বেও রপ্তানি বৃদ্ধির গতি মন্থর। এর পেছনে অন্যতম কারণ বন্ড সুবিধার সঙ্কুচিত পরিধি। বন্ড সুবিধা না পেলে কাঁচামালের আমদানি ও উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়, যা রপ্তানি খাতকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। “বন্ড সুবিধা পাওয়া মানে সাশ্রয়ী খরচে কাঁচামাল আনা, যা আমাদের দাম কমিয়ে দেয় এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সাহায্য করে,” বলেন আসবাবশিল্প সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেন।
“বন্ড সুবিধা ছাড়া আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে পারব না, কারণ উৎপাদন খরচ এতটাই বেড়ে যায় যে প্রতিযোগিতার সুযোগ থাকে না।” শিল্পী আলমগীর হোসেন
বন্ড সুবিধার সংকোচন: উৎপাদন ও রপ্তানিতে প্রভাব
বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট ও রাজস্ব নীতির পরিবর্তনের কারণে বন্ড সুবিধার আওতায় থাকা পণ্যসমূহ সীমিত হচ্ছে। এর ফলে আসবাবশিল্পীরা উচ্চ মূল্যের কাঁচামাল আমদানির জন্য অতিরিক্ত ব্যয় বহন করছেন। ফলে তারা রপ্তানি দামে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন। বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতির (ইপিবি) এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বন্ড সুবিধা কমে যাওয়ায় গত এক বছরে আসবাব রপ্তানি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়নি, বরং কিছু ক্ষেত্রে হ্রাস পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজার ও প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ
বিশ্ববাজারে আসবাবশিল্প এক দিক থেকে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। ভিয়েতনাম, চীন ও ভারত এই খাতে বাংলাদেশকে টেক্কা দিচ্ছে। তারা সাশ্রয়ী মূল্য ও বন্ড সুবিধার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বন্ড সুবিধা ও কর সুবিধা না দিলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর রপ্তানির সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ যেন এ বিষয়গুলোতে আরও নজর দেয়।”
প্রস্তাবনা ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বন্ড সুবিধার আওতা বাড়ানো এবং সহজ শর্তে সুবিধা প্রদান বাংলাদেশের আসবাবশিল্পকে নতুন মাত্রা দেবে। এ ক্ষেত্রে সরকার ও শিল্প পেশাজীবীদের মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের আসবাবশিল্পের স্বপ্ন বড়। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বন্ড সুবিধা যেন রপ্তানির ‘চাবি’। এর অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিল্প ও অর্থনীতি সময় এসেছে সঠিক নীতি প্রণয়নের।