স্বাধীনতা, প্রেম, ধর্ম আর জাতিসত্তার দ্বন্দ্বে আল মাহমুদের কবিতা আজও জীবন্ত।
প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২৫, ২:১৮:৫০
কবিতা শুধুই ছন্দের খেলা নয় তা হয়ে উঠতে পারে ইতিহাসের ভাষ্য, সময়ের সনদ। আর সে ভাষ্যেই বারবার আলোকিত হয়েছেন আল মাহমুদ। স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক জাতীয় সংকট এই কবির কবিতা যেন এক অদৃশ্য মশাল, যা জাতিকে এগিয়ে নিতে চেয়েছে প্রতিটি বাঁকে। ১৯৬৩ সালে প্রকাশিত ‘সোনালী কাবিন’ দিয়ে শুরু। এরপর একে একে ‘আলাদা এক্তিয়ার’, ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’, ‘দাবানলে রূপবতী’ প্রতিটি কাব্যগ্রন্থেই ছিল ভাষার বিপ্লব, হৃদয়ের বিদ্রোহ।
পুল কোড
“আল মাহমুদের কবিতা আমাদের দেয় শিকড়, আবার ডাকে আকাশেও” ড. রতন সরকার, সাহিত্য বিশ্লেষক।
আল মাহমুদের কবিতায় প্রেম যেমন এসেছে রক্তমাখা পাঁজরের পাশে, তেমনি ধর্মও এসেছে চেতনাবোধের অন্তর্লয় থেকে not as division, but as devotion. তাঁর কবিতা হয়ে উঠেছে বহু বাংলার মিলিত ভাষ্য। বিশ্বসাহিত্যের তুলনায়ও আল মাহমুদের কাব্যকলা অনন্য। যেমন প্যাবলো নেরুদা বা নাজিম হিকমতের কবিতা বিপ্লবের সঙ্গী, তেমনই বাংলায় এই ভূমিকা পালন করেছেন আল মাহমুদ। তিনি লিখেছেন, "আমার কলম জানে কখন ব্যথা গোপন রাখতে হয়, কখন আবার ফুঁসে উঠতে হয় আগুনের মত ” সাহিত্য বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুব হোসেন বলেন, “আল মাহমুদের কবিতা রাজনীতি নয়, বরং সময়ের অভিজ্ঞতা, যা মানুষকে নিজেকে খুঁজে পেতে সাহায্য করে।” তাঁর কবিতা শুধু পড়ার জন্য নয়, সংকটে তা হয়ে ওঠে একধরনের আত্মবিশ্বাস। আজ যখন সাহিত্য চর্চা সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে নির্ভর করে, তখন আল মাহমুদের কবিতা যেন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় সাহিত্য হতে হবে মননশীল, সময়ের সাথী, জাতির সঞ্চয়।
শুধু বইয়ের পাতায় নয়, আল মাহমুদের কবিতা বেঁচে আছে মানুষের রক্তে, সংগ্রামে, প্রেমে আর প্রার্থনায়। জাতির প্রতিটি প্রতিরোধ, প্রত্যয়ের পাশে তাঁর কবিতা যেন ছায়ার মতো সঙ্গী নীরব অথচ দৃঢ়।