ঢাকায় আয়োজিত জমজমাট বৃক্ষমেলা সবুজের ছায়ায় জমেছে হাজারো মানুষের মেলা
প্রকাশিত : ২৯ জুন ২০২৫, ১:৪৪:৫৬
বৃক্ষের ডাকে মানুষ, মেলায় প্রাণ:
বৃষ্টি আর গরমের মাঝে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জমেছে ভিন্ন এক উৎসব জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০২৫। এবারের আয়োজনে অংশ নিচ্ছে দেশের ৫০টিরও বেশি নার্সারি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। জাম, আম, লিচু, কাঠাল, সহস্র প্রজাতির বনজ, ফুল ও ঔষধি গাছের টবের পাশে ভিড় করছেন নানা বয়সী দর্শনার্থীরা।
“গাছ লাগানো শুধু শখ নয়, এটা দায়িত্ব পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।” —মো. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক ও বৃক্ষপ্রেমী
পরিবেশ বাঁচাতে গাছের বিকল্প নেই:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন আর শহরের উত্তাপ ঠেকাতে বৃক্ষরোপণই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর ও বাস্তবসম্মত উপায়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সদস্য শারমিন হক বলেন, “প্রতিটি নাগরিক যদি বছরে অন্তত একটি গাছ রোপণ করে, তাহলে আগামী দশকে ঢাকাও হতে পারে এক বসবাসযোগ্য নগর।” মেলায় এবার বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে ‘ছাদকৃষি’ ও ‘শহুরে বাগান’ বিষয়টি। ছোট ফ্ল্যাট কিংবা অফিসেও যে বাগান করা সম্ভব, সেটিই যেন প্রমাণ করছে মেলার স্টলগুলো।
প্রযুক্তি ও সচেতনতার মেলবন্ধন:
এই মেলায় এসেছে নতুন ধরণের অ্যাপ-ভিত্তিক গাছ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে গাছ চেনা, পরিচর্যা জানা ও যত্ন নেওয়া যাবে সহজে। উদ্ভাবনী উদ্যোগ হিসেবে অংশ নিচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিন ক্লাব ও পরিবেশ-বিষয়ক স্টার্টআপ। এতে তরুণদের অংশগ্রহণও চোখে পড়ার মতো। বিশ্বজুড়ে ‘আরবান গ্রিনিং’ বা শহরকে সবুজ করার আন্দোলনের অংশ হিসেবে, এমন উদ্যোগকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘সময়োপযোগী ও কৌশলী সিদ্ধান্ত’।
আগামী প্রজন্মের জন্য সবুজ চিন্তা:
বৃক্ষমেলার একটি বড় লক্ষ্য ছোটদের মধ্যে গাছের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা। তাই এবার শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা সেগমেন্ট, হাতে-কলমে গাছ লাগানো শেখানোর কর্মশালা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও পরিবেশ রক্ষার গল্প। শুধু গাছ কেনা বা ছবি তোলার জায়গা নয়, জাতীয় বৃক্ষমেলা হয়ে উঠেছে মানুষের পরিবেশ সচেতনতার প্রতিচ্ছবি। সবুজ ফিরে পেতে হলে এখনই প্রয়োজন সবুজে ফিরে যাওয়া। বৃক্ষরোপণের এই ডাক যেন শুধু মেলা না হয়ে ওঠে জাতীয় আন্দোলন।