নামাজ—মুসলমান জীবনের কেন্দ্রবিন্দু, আত্মার প্রশান্তি
প্রকাশিত : ২৪ জুন ২০২৫, ১১:১৭:৪২
নামাজে মনোযোগের গুরুত্ব আল্লাহ তাআলা বলেন, “নিশ্চয়ই সফল হয়েছে মুমিনরা, যারা তাদের নামাজে বিনয়ী ও একাগ্র।” (সূরা মুমিনুন: ১-২) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “নিকৃষ্টতম চোর হলো সেই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।” জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! নামাজে কীভাবে চুরি করা হয়? তিনি বললেন, “যে রুকু ও সেজদা পূর্ণভাবে আদায় করে না।”
(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৮৮৫)
মনোযোগহীনতার কারণ: ইমাম গাজালি (রহ.) তার বিখ্যাত ‘এহইয়াউ উলুমিদ্দীন’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, নামাজে মনোযোগ হারানোর দুটি প্রধান কারণ: বাহ্যিক ও মানসিক। বাহ্যিক কারণ যেমন শব্দদূষণ ও শোরগোল; মানসিক কারণ যেমন বিক্ষিপ্ত চিন্তা-ভাবনা, দুশ্চিন্তা ও মানসিক অস্থিরতা। তিনি বলেন, “নামাজে একাগ্রতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন অন্তরের স্থিরতা ও আল্লাহর প্রতি গভীর মনোযোগ।”
মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
১. আয়াতের অর্থ বোঝা: নামাজে পাঠিত আয়াত ও দোয়ার অর্থ জানলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
২. ধীরস্থিরতা: নামাজে তাড়াহুড়া না করে প্রতিটি রোকন ধীরস্থিরভাবে আদায় করা উচিত।
৩. নীরব পরিবেশ: নামাজের জন্য শান্ত ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশ নির্বাচন করা মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৪. আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব: নামাজে দাঁড়িয়ে কল্পনা করুন, আপনি আল্লাহর সামনে আছেন এবং তিনি আপনাকে দেখছেন। রাসুল (সা.) বলেন,“আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে, যেন তুমি তাকে দেখছো; আর যদি না দেখতে পারো, তবে (ভাবো) তিনি তোমাকে দেখছেন।”(বুখারি, হাদিস: ৫০; মুসলিম, হাদিস: ৮) চিন্তা করার সময় এখনই
নামাজ কেবল শারীরিক অনুশীলন নয়; এটি আত্মার প্রশান্তি ও আল্লাহর সঙ্গে সংযোগের মাধ্যম। মনোযোগহীন নামাজ আমাদের আত্মিক উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করে। আসুন, আমরা আমাদের নামাজে মনোযোগ ফিরিয়ে আনি, আল্লাহর প্রতি বিনয় ও একাগ্রতা অর্জন করি। "নামাজে দাঁড়ালাম আমি শরীরে নয়, আত্মায়। প্রত্যেক রুকু, প্রত্যেক সেজদায় নিজেকে হারিয়ে ফেলি স্রষ্টার কাছে। এই নামাজই যদি না বদলায় আমাকে, তাহলে আমি নামাজেই নেই!" চলুন, আজ থেকেই শুরু করি মন দিয়ে নামাজ কারণ আল্লাহ আমাদের কণ্ঠ নয়, হৃদয় শুনতে চান।