ইসলামের সূচনালগ্নে যিনি হয়েছিলেন সাহস, বিশ্বাস আর ভালোবাসার আলোকবর্তিকা। ব্যবসা, ন্যায় আর আত্মত্যাগে বিবি খাদিজা (রা.) হয়ে উঠেছেন ইতিহাসের অনন্য নারী।
প্রকাশিত : ২২ জুন ২০২৫, ১:২৭:৩৪
নারী ক্ষমতায়ন, আত্মনির্ভরতা কিংবা নেতৃত্ব যতই আমরা আধুনিক শব্দ ব্যবহার করি না কেন, এ ধারণার এক অদ্বিতীয় জীবন্ত উদাহরণ ছিলেন হজরত খাদিজা (রা.)। ইসলামের প্রথম নারী মুসলমান, প্রথম উৎসাহদাত্রী, এবং মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয়তমা স্ত্রী হিসেবে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। বিবি খাদিজা ছিলেন মক্কার একজন সফল ব্যবসায়ী। সেই যুগে যখন নারীদের বাইরে বের হওয়াই ছিল বিরল, তখন তিনি নিজ ব্যবসায়িক দূত পাঠিয়ে সারা আরবজুড়ে বাণিজ্য করতেন। নবীজিকে (সা.) ব্যবসায়িক দায়িত্ব দেওয়ার পরই তাঁর সততা, দায়িত্ববোধ ও নৈতিকতা দেখে তিনি আকৃষ্ট হন এবং প্রস্তাব দেন বিয়ের। বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলার ড. ইয়াসির কাদি বলেন, “খাদিজা (রা.)-র চরিত্র প্রমাণ করে, নারী শুধু সংসারের নয় সমাজ, ধর্ম ও নেতৃত্বেরও কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে।”
বিবি খাদিজা শুধু নবীজির স্ত্রী ছিলেন না, বরং তিনিই ছিলেন প্রথম মানুষ যিনি তাঁর নবুয়তের সংবাদে অন্ধকারে আলো দেখেছিলেন। যাঁর সাহচর্যে নবীজি (সা.) তাঁর সবচেয়ে কঠিন সময়েও মনোবল হারাননি। ইউনেস্কো ও বিশ্বের নানা গবেষণা সংস্থা বারবার খাদিজা (রা.)-কে নারীর মর্যাদার মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২3 সালে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি ইসলাম আন্তারজাতিকায় এক গবেষণায় দেখা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের ১০০ নারী শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৬ জন বিবি খাদিজা (রা.)-কে তাদের রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করেন। তাঁর জীবনের অনুপ্রেরণাদায়ী অংশ হলো, যিনি ক্ষমতাধর হয়েও ছিলেন বিনয়ী, সম্পদশালী হয়েও ছিলেন দানশীলা, আর ভালোবাসায় ছিলেন নিঃস্বার্থ।
“নারী শুধু সৌন্দর্য নয়, শক্তি, সাহস আর প্রজ্ঞারও নাম-যা বিবি খাদিজা (রা.)-র জীবনে উজ্জ্বলভাবে ফুটে উঠেছে।”
বিবি খাদিজা (রা.)-র জীবন আমাদের শেখায় যদি মনোবল অটুট থাকে, বিশ্বাস দৃঢ় হয় এবং ভালোবাসা বিশুদ্ধ হয়, তাহলে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু সম্ভবই নয়, ইতিহাসে স্থায়ী হয়ে ওঠে। এই কারণে, বিবি খাদিজা (রা.) শুধুমাত্র এক নারীর নাম নয় তিনি এক মহান আদর্শ, যাঁর আলো যুগে যুগে নারীদের পথ দেখাবে।