দুর্নীতি ও অনিয়মের পাহাড়, বিমানের সাবেক আইনপ্রধান রাশেদ মেহেরের ভাগ্য নির্ধারণের অপেক্ষায়
প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩২:১৫
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের সাবেক প্রধান ডিজিএম রাশেদ মেহের চৌধুরীর বেআইনি কর্মকাণ্ডের তদন্ত প্রায় শেষ। যেকোনও মুহূর্তে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হতে পারে।
রাশেদ মেহের চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—শ্রম আইন লঙ্ঘন করে ওভারটাইমের পরিবর্তে কলডঅন প্রথা বৈধতা দেওয়া, মামলাগুলো এককভাবে নির্দিষ্ট আইনজীবীকে দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া, এয়ারবাস চুক্তিতে স্বার্থবিরোধী ভূমিকা রাখা, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা আটকে রাখা, যৌন হয়রানির মামলার ফাইল গোপন রাখা এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিতে বিমানের হাজার কোটি টাকার ক্ষতি ডেকে আনা।
তার বিরুদ্ধে দুটি বিভাগীয় মামলা তদন্তাধীন। এক মামলায় অভিযোগ—৯টি নথি ২–৪ বছর আটকে রাখা। আরেক মামলায় অভিযোগ—কেবিন ক্রুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত এক কর্মকর্তার ফাইল প্রায় ৩ বছর আটকে রেখে তাকে অবসরে পালাতে দেওয়া। বিমানের অভ্যন্তরে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। ওই সিন্ডিকেট বিদেশি একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পিএসএস সিস্টেম কিনে হাজার কোটি টাকা ক্ষতির কারণ হয়, যা সরকারি নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ধরা পড়ে।
চলতি বছরের মে মাসে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধান শুরু করে। নথি সংগ্রহের জন্য দুদক বিমানে চিঠি পাঠায়। অতীতে বিমানের দুর্নীতি-অনিয়মে কুখ্যাত পাঁচ কর্মকর্তার ‘পঞ্চরত্ন সিন্ডিকেট’ এর অন্যতম ছিলেন রাশেদ মেহের চৌধুরী। বর্তমানে তিনি ওএসডি হিসেবে বিমানের ছাপাখানা বিভাগে সংযুক্ত আছেন।
বিমানের মুখপাত্র এ বি এম রওশন কবীর বলেন, “তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।” তবে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, গুরুতর অভিযোগে দায়ের করা মামলাগুলোতে তার বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত। এমনকি চাকরিচ্যুতও করা হতে পারে। অভিযোগ বিষয়ে রাশেদ মেহের চৌধুরী বলেন, “আমার স্বপক্ষে ডকুমেন্ট তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দিয়েছি। সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্পূর্ণ তাদের বিষয়।”
২০০৯ সালে বিমান বাংলাদেশে আইন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন রাশেদ মেহের চৌধুরী। দীর্ঘদিন প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মচারীদের আন্দোলনে বলাকা ভবন থেকে পালিয়ে বাঁচেন তিনি।