একদিকে বিপুল আয়, অন্যদিকে মোটা মুনাফা অ্যাপেক্স ও বাটার ব্যবসায়িক কৌশলে পার্থক্য এবার চোখে পড়ছে স্পষ্টভাবে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, উৎপাদন খরচ, মানবসম্পদ ও বিপণন কাঠামো গড়েই তৈরি হয়েছে এই ভিন্নতা।
প্রকাশিত : ১৭ জুন ২০২৫, ১২:২৭:৫১
আয় বনাম মুনাফা: কোথায় ফাঁক?
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাটার ঝুঁকিহীন ও কনজারভেটিভ ব্যবসায়িক মডেল মুনাফা ধরে রাখার প্রধান কারণ। বাটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভাড়া করা আউটলেটে পণ্য বিক্রি করে, যেখানে নিজস্ব শ্রমিক বা প্রডাকশন কম। অপরদিকে, অ্যাপেক্স বিশাল কর্মী বাহিনী, নিজস্ব ফ্যাক্টরি ও সরবরাহ চেইনের ওপর নির্ভরশীল, যা একদিকে আয় বাড়ালেও খরচ বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ হারে।
“অ্যাপেক্স বুল্ক ব্যবসায় বিশ্বাসী, তাই পুঁজির টান পড়ে বেশি। বাটা ফোকাস করে মুনাফার স্থায়িত্বে,” মন্তব্য করলেন শিল্পবিশ্লেষক আরিফ হোসেন।
মার্কেটিং ও কৌশলে বৈপরীত্য
দুই প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং কৌশলেও পার্থক্য চোখে পড়ে। অ্যাপেক্স সোশ্যাল মিডিয়া ও ফ্যাশন ট্রেন্ডে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আগ্রহী হলেও, বাটা গ্লোবাল ব্র্যান্ড ইমেজের ওপর জোর দিয়ে ‘মিডল ইনকাম’ শ্রেণির মাঝে নির্ভরযোগ্যতা ধরে রাখে। বিশ্বজুড়ে জুতো শিল্পে এখন কাস্টমাইজেশন, সাসটেইনেবল মেটেরিয়াল ও ইনোভেটিভ ডিজাইন নিয়ে কাজ চলছে। যেখানে অ্যাপেক্স এখনও গণউৎপাদনের ফর্মুলায় আছে, বাটা ধীরে ধীরে ‘গ্লোবাল ফ্যাশন রোডম্যাপ’-এর সাথে খাপ খাওয়াচ্ছে।
“আয় বেশি মানেই লাভ বেশি নয়, কর্মী ব্যয় আর কৌশল ঠিক না থাকলে ফাঁক থেকেই যায়।”
ভবিষ্যতের পথ কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাপেক্স যদি কর্মী ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন খরচের দিকে মনোযোগ না দেয়, তাহলে তারা আয়ের বিশালতাকে মুনাফায় রূপান্তর করতে পারবে না। অন্যদিকে, বাটার জন্য চ্যালেঞ্জ হলো তরুণ বাজার ধরে রাখা, যেখানে অ্যাপেক্স তুলনামূলকভাবে এগিয়ে। দু’টি পথ, দু’টি কৌশল কিন্তু একই লক্ষ্য: দেশের এক নম্বর জুতো ব্র্যান্ড হওয়া। এখন দেখার পালা, আয় না মুনাফা কে এগিয়ে নেবে এই রেস?
শেষ লাইন:
বাংলাদেশের পাদুকাশিল্পের এই ‘দু’মুখো গল্প’ শুধু আয়-মুনাফার পরিসংখ্যান নয়, বরং তা ব্যবসার গভীর দর্শনের প্রতিফলন যেখানে সংখ্যার পেছনে লুকিয়ে থাকে কৌশলের গল্প।