চাকরির প্রলোভনে শতাধিক যুবক পৌঁছে গিয়েছিলেন ইউরোপে। গন্তব্য ছিল যুদ্ধক্ষেত্র।
প্রকাশিত : ১৭ জুন ২০২৫, ৩:৪৮:১৪
‘চাকরি দেবে’ বলেই নিয়েছিল জীবনটা!
ঢাকার কেরানীগঞ্জের তরুণ শাকিলের গল্প এখন ভাইরাল। ট্যুরিস্ট ভিসায় দুবাই গিয়ে সেখান থেকে “সিকিউরিটি জব” বলে তাঁকে পাঠানো হয় ইউরোপের এক সীমান্ত শহরে। কিছুদিন পরই তাঁকে অস্ত্রধারণ করতে বলা হয়। “বলেছিল চাকরি, কিন্তু হাতে ধরিয়ে দিল রাইফেল। না বললে খাবার বন্ধ করে দেবে বলেছিল,” বলেন শাকিল এক গোপন ভিডিও বার্তায়।
মূলহোতা ধরা পড়েছে
সম্প্রতি ইন্টারপোলের সহায়তায় এক যৌথ অভিযানে ধরা পড়ে গিয়েছে এই চক্রের প্রধান পাকিস্তান বংশোদ্ভূত রিক্রুটিং এজেন্ট মোহাম্মদ সাদ্দাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত এক বছরে অন্তত ১৮০ জন যুবককে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়েছে, যেখানে অনেকেই আহত, কেউ কেউ নিখোঁজ।
“বেকারত্বের কাঁধে বন্দুক চাপিয়ে দিয়েছে এক প্রতারণার সাম্রাজ্য।” — অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ড. শাওন রহমান
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি ও আলজাজিরাসহ বিশ্ব মিডিয়ায় উঠে এসেছে এই ভয়াবহ ষড়যন্ত্র। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো ‘বিদেশি ভাড়াটে সৈনিক’কে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন ছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হয়নি। ফলে এই চক্র কার্যত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ছে।
বিশেষজ্ঞ মত
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ড. শাওন রহমান বললেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে 'চাকরি' ও 'সেটেলমেন্ট' অফারের আড়ালে চলছে আধুনিক মানব পাচারের নতুন রূপ। বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিনই শত শত আবেদন যাচ্ছে তাদের যাচাই-বাছাইয়েই ঘাটতি।”
এই গল্পটি শুধু প্রতারণার নয় এটি এক প্রজন্মের স্বপ্নভঙ্গের গল্প। অস্ত্র নয়, এই তরুণেরা চেয়েছিল কলম। অথচ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হলো যুদ্ধের আগুন। এখন সময় এসেছে রাষ্ট্র, সমাজ ও গণমাধ্যমকে একযোগে সোচ্চার হওয়ার যাতে আর কেউ ‘চাকরি’র নামে না হারায় নিজের জীবন।