কাগজে-কলমে চুক্তি থাকলেও বাস্তবে কমছে ভারতে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রেনের সংখ্যা, ক্ষতির মুখে রাজস্ব ও ব্যবসায়ী
প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০২৫, ১২:০৭:১৯
দেশের প্রধান স্থলবন্দর বেনাপোলের মাধ্যমে রেলপথে আমদানি উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ২৯ হাজার মেট্রিক টন কম পণ্য এসেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৫ আগস্টের পর থেকে ভারত সরকারের একাধিক নিষেধাজ্ঞা আর বেনাপোল রেলস্টেশনের দুর্বল অবকাঠামোর কারণে বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, বেনাপোল বন্দর হচ্ছে একমাত্র স্থলবন্দর যেখানে ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে রেল ও সড়কপথে পণ্য আমদানি-রফতানি হয়। তবে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক পণ্য সঠিক সময়ে আমদানি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, যদিও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই বছর আগে রেলে পণ্য রফতানির অনুমতি দিয়েছে, বাস্তবে এখনও রেলপথে রফতানি শুরু হয়নি।
বেনাপোল রেলস্টেশনে কার্গো খালাসের জন্য কোনও বিশেষ ইয়ার্ড না থাকায় পণ্য খালাসে বিলম্ব হচ্ছে। বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, গত অর্থবছরে রেলে ভারত থেকে মাত্র ১,২৯৬টি ওয়াগানে ১২ হাজার মেট্রিক টন পণ্য এসেছে, যা আগের বছরের ৪১ হাজার মেট্রিক টনের থেকে অনেক কম।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, “রেলের অবকাঠামোর উন্নয়ন ছাড়া খালাসের সমস্যা মিটবে না। দ্রুতই ইয়ার্ড নির্মাণ করতে হবে।”
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, বর্তমানে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সুতা, গুঁড়ো দুধ, প্রিন্ট পেপার, পেপার বোর্ড, মাছ ও তামাক আমদানি বন্ধ রয়েছে। রফতানি হয়েছে পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাবপত্র এবং ফলও।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. সাইদুজ্জামান বলেন, “ভারতের নিষেধাজ্ঞার ফলে বাণিজ্য কমেছে। দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য আমাদের কার্গো ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। রেলপথে রফতানি চালুর জন্য দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।”
ব্যবসায়ীরা দুই দেশের সরকারকে বাণিজ্য সচল ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে বেনাপোলের মাধ্যমে আমদানি-রফতানি আবারও স্বাভাবিক ও বেগবান হয়।