ফেসবুক-টিকটকে 'সান্ডা তেল' নিয়ে ট্রেন্ডিং ভিডিওর ছড়াছড়ি কিন্তু
প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৫, ৪:৪৫:৪৮
সাব-হেডলাইন:ফেসবুক-টিকটকে 'সান্ডা তেল' নিয়ে ট্রেন্ডিং ভিডিওর ছড়াছড়ি কিন্তু আসলেই কী আছে এই প্রাণীর পেছনে? জানুন বিজ্ঞান, ব্যবসা ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের খোলনলচে
ট্রেন্ডের সূত্রপাত:হঠাৎ করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবক বাজারে হাঁটছে হাতে 'সান্ডা টিকটিকি' এবং দাবি করছে, "এই তেলেই মেলে শক্তি, পুরুষত্বের গ্যারান্টি!" কয়েকদিনের মধ্যেই টিকটকে #SandaOil ট্রেন্ডে উঠে আসে হাজারো রিল, যেখানে কেউ মজা করছে, কেউ সিরিয়াস আলোচনা চালাচ্ছে, আবার কেউ বিক্রি করতে চাচ্ছে ‘সান্ডা তেল’।
‘সান্ডা টিকটিকি’ আসলে কী?
'সান্ডা' মূলত একটি প্রজাতির গিরগিটি (Monitor Lizard)। দক্ষিণ এশিয়ায় একে আঞ্চলিকভাবে ‘গো সাপ’ বা ‘গোঁসাপ’ও বলা হয়। এটি একটি বিপন্ন প্রজাতি, যার ওপর গবেষণা অনুযায়ী
এর কোনো প্রমাণিত যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির গুণ নেই
বাজারে যেসব সান্ডা তেল পাওয়া যায়, তার বেশিরভাগই ভেজাল
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে এই প্রাণী ধরা, হত্যা ও বিক্রি করা অপরাধ
ব্যবসার নামে ভ্রান্ত বিশ্বাস বিভিন্ন বাজারে 'সান্ডা তেল' নামে বিক্রি হচ্ছে ৫০০-১৫০০ টাকা দামের কাচের শিশি। অনেকে একে পুরুষত্ব বৃদ্ধির প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে উপস্থাপন করে। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন ডাঃ রাশেদুল ইসলাম (সেক্সোলজিস্ট):“সান্ডা তেল নিয়ে যেসব দাবি করা হয়, তা পুরোপুরি গুজব। এতে কেবল শারীরিক নয়, মানসিক প্রতারণাও রয়েছে। এমনকি এসব তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।”
আইন কী বলছে?
বাংলাদেশের বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন, ২০১২ অনুসারে সান্ডা ধরা, হত্যা, সংরক্ষণ ও এর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বেচাকেনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দোষী সাব্যস্ত হলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানা হতে পারে।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ: ইসলামও কোনো প্রাণীর অপ্রমাণিত উপাদান দিয়ে মানুষের দুর্বলতা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বরং আল্লাহর ওপর ভরসা, শারীরিক সুস্থতা ও পরিমিত জীবনযাপনকে গুরুত্ব দিয়েছে।
“ولا تلقوا بأيديكم إلى التهلكة”
“নিজেদের ধ্বংসের মুখে ফেলো না।” [সূরা বাকারা, ২:১৯৫]
সোশ্যাল ট্রেন্ড বনাম বাস্তবতা
সোশ্যাল ক্লেইম
বাস্তব তথ্য
যৌন ক্ষমতা বাড়ায়
বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই
‘হালাল’ তেল
মূলত ভেজাল
পুরনো আয়ুর্বেদে ছিল
সত্য, তবে আজকের প্রক্রিয়া ভিন্ন
ভুয়া ট্রেন্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই
এই ধরণের ভাইরাল ট্রেন্ড আমাদের বাস্তবতা ও বিজ্ঞানচর্চাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তরুণ সমাজ যদি প্রতিটি ভাইরাল কন্টেন্টকে যাচাই না করে বিশ্বাস করে, তাহলে অন্ধবিশ্বাস, প্রতারণা ও অপরাধ আরও ছড়াবে।