দই শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, বরং স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্যও এক অনন্য উপকারী। প্রতিদিন কিছুটা দই খেলে শরীর ও মনের নানা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৫২:২৭
দই আমাদের খাবারের অতি পরিচিত হলেও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেকেরই অজানা। খাদ্যতাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, দইয়ের নিয়মিত সেবন হজম শক্তি, ইমিউন সিস্টেম, হৃদরোগ প্রতিরোধ এবং মানসিক সুস্থতায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
প্রথমত, দই হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এটি শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় না, বরং অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়।
দ্বিতীয়ত, এটি ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত দই খেলে শরীর নানা সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে শীতকালে এটি রক্ষণশীল প্রতিরোধ ক্ষমতা হিসেবে কাজ করে।
তৃতীয়ত, দই হৃদয়কে সুস্থ রাখে। এতে থাকা ক্যাপ্রিলিক অ্যাসিড এবং ল্যাক্টিক অ্যাসিড হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।
চতুর্থত, দই মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। গবেষণা অনুযায়ী, অন্ত্রের স্বাস্থ্য মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত। দইয়ের প্রোবায়োটিক মানসিক চাপ হ্রাস ও মুড উন্নত করতে সহায়ক।
পঞ্চমত, এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। দই দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, যা অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে। বিশেষ করে গ্রিক দই বা কম ফ্যাট দই ওজন কমানোর খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়েটেশিয়ান ড. মিন্টু করিম বলেন, “দই খাওয়া কেবল হজম নয়, এটি হৃদয়, মস্তিষ্ক এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন মাত্র এক বাটি দই এই সব সুবিধা দিতে সক্ষম।”
বিশ্বজুড়ে দইয়ের জনপ্রিয়তা অনন্য। যেমন ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে ‘দহি’ সংস্কৃতি, তুরস্কে ‘য়োগুর্ত’ সবখানেই প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই খাওয়া হয়ে আসছে। এটি প্রমাণ করে, দই কেবল স্বাদই নয়, স্বাস্থ্যকেও মজবুত রাখে।
“দই খাওয়া কেবল হজম নয়, এটি হৃদয়, মস্তিষ্ক এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ ভূমিকা রাখে।” — ড. মিন্টু করিম, ডায়েটেশিয়ান
সার্বিকভাবে বলা যায়, প্রতিদিন দই খাওয়াকে খাদ্যাভ্যাসের অংশ করলে শরীর ও মনের জন্য আশ্চর্যজনক উপকার পাওয়া যায়। এটি একদিকে সুস্বাদু, অন্যদিকে স্বাস্থ্যবর্ধক—সেই কারণে দই প্রতিদিনের ডায়েটে রাখাই বাঞ্ছনীয়।