প্রকাশিত : ০৩ জুন ২০২৫, ৩:০৪:১৩
স্বাস্থ্য সেবায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে মা ও শিশুর যত্নের মান উন্নত করতে নতুন হাসপাতালগুলো দেবে সেবার নতুন গতি।
উন্নত প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষিত জনবল নিয়ে মা ও শিশু মৃত্যুহারের বিরুদ্ধে লড়াই আরও শক্তিশালী হবে।
“মা ও শিশুর নিরাপদ জন্মই জাতির স্বাস্থ্যবান ভবিষ্যতের মূল চাবিকাঠি,” ডা. রাশিদা পারভীন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হ্রাস ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের উদ্যোগে দেশজুড়ে ১০০টি আধুনিক মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা এসেছে।
লোকাল গল্প:বরগুনার পল্লবী বেগম তার তিন সন্তানের মা। অনেক বছর ধরেই তিনি গ্রামের স্বাস্থ্যসেবার অভাবে চরম সমস্যায় পড়তেন। সম্প্রতি তার এলাকার নতুন মা ও শিশু হাসপাতাল চালু হওয়ার পর থেকে, পল্লবী বলছেন, “এখন আমি নিশ্চিন্তে গর্ভধারণ ও প্রসব করব, কারণ পাশে এমন একটি হাসপাতাল আছে যা সব ধরনের সেবা দেবে।”
আধুনিক প্রযুক্তি ও ডাটা:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ১০০,০০০ জন প্রসবকালে ১৭ জন মা মৃত্যুবরণ করেন, যা এখনও অনেক উন্নত দেশের তুলনায় বেশি। নতুন মা ও শিশু হাসপাতালগুলো অত্যাধুনিক আল্ট্রাসাউন্ড, লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম, neonatal intensive care unit (NICU) এবং আধুনিক জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সজ্জিত হবে।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৭ সালের মধ্যে এই হাসপাতালগুলো পুরো দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে গড়ে তোলা হবে, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার বৈষম্য দূর হবে এবং মাতৃ-মৃত্যু হ্রাস পাবে।
সামাজিক প্রভাব ও প্রশ্ন:
টেকনোলজি ও প্রশিক্ষণ:
নতুন এই হাসপাতালগুলোতে টেলিমেডিসিন সুবিধা থাকবে, যা অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ করে দেবে। তাছাড়া স্থানীয় নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যাপক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, যাতে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হয়।
১০০টি মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্য প্রকল্প নয়, এটি জাতির মঙ্গল ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। আধুনিক প্রযুক্তি ও জনবল এই পদক্ষেপকে শুধু কার্যকর করবে না, বরং প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের জীবনে নতুন আশা জাগাবে। তবে এই সাফল্যের সঠিক বাস্তবায়নের জন্য দরকার সার্বিক নীতি, স্থানীয় জনসচেতনতা ও সমন্বিত সামাজিক অংশগ্রহণ। কারণ একবার মায়ের জীবন নিরাপদ হলেই পুরো সমাজের স্বাস্থ্যের গতি বদলে যায়।আপনি কি মনে করেন, এই উদ্যোগ আমাদের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহরের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ফাঁক পুরণ করতে সক্ষম হবে? স্বাস্থ্যসেবায় এই নতুন অধ্যায় বাংলাদেশের প্রতি নাগরিকের জন্য এক অনন্য আশার আলো।