যুদ্ধ নেই, বড় হুমকিও নেইতবু কেন বাড়ছে প্রতিরক্ষা ব্যয়?
প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৫, ৪:৩০:৪৯
যুদ্ধ নেই, বড় হুমকিও নেই তবু কেন বাড়ছে প্রতিরক্ষা ব্যয়? নতুন বাজেটে সামরিক খাতে রেকর্ড পরিমাণ বরাদ্দ ঘিরে উঠছে নানা প্রশ্ন।
মূল পয়েন্টসমূহ:
প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে ১১%,বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সামরিক ব্যয়ের প্রতিযোগিতা,শিক্ষা-স্বাস্থ্য উপেক্ষিত, অগ্রাধিকার বাহিনীর আধুনিকায়ন, জনমনে প্রশ্ন: শান্তিপূর্ণ দেশ, তবে কেন এই প্রস্তুতি? বিশেষজ্ঞ মত: প্রতিরক্ষা কূটনীতি না বাজেট চাপ?
"শান্তির সময়ে অস্ত্র কিনলে, যুদ্ধের সময়ে খাদ্য কিনতে হয়!" ব্রিগেডিয়ার (অব.) জাহিদুল হক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক
রেকর্ড বাজেট, অস্ত্রের ছায়া দীর্ঘতর
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি, যা গত বছরের তুলনায় ১১% বেশি। এই বাড়তি ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যখন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বেড়েছে নামমাত্র বরাদ্দ, তখন সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর উন্নয়নে এত নজর কেন?
শান্তি হোক, প্রস্তুতিও থাক
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানো মানেই যুদ্ধের প্রস্তুতি নয়। এটি আধুনিকায়নের একটি অংশ। তবে প্রশ্ন হলো বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যেহেতু বড় কোনো সামরিক হুমকির মুখে নেই, তখন কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করাই কি বেশি জরুরি ছিল না?
বিশ্ব প্রেক্ষাপটে প্রতিযোগিতা
বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় বেড়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)-এর তথ্যমতে, ২০২৪ সালে চীন, ভারত ও সৌদি আরব তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় আগের বছরের তুলনায় অনেক বাড়িয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশও পিছিয়ে থাকতে চায় না বলেই অনেকে মনে করেন।
জনগণের চোখে অগ্রাধিকার কোথায়?
সাধারণ নাগরিকদের জন্য যেখানে চিকিৎসা, খাদ্য, ও শিক্ষার খরচ বেড়েছে, সেখানে প্রতিরক্ষায় অতিরিক্ত বরাদ্দ মানে রাষ্ট্রের অগ্রাধিকার কী এই প্রশ্ন সামনে এসেছে। চাকরিজীবী রুবিনা ইসলাম বলেন, “দরকার পড়লে সেনাবাহিনী পাশে থাকে ঠিকই, কিন্তু আমরা হাসপাতালে বেড পাই না, ওষুধ নেই তাহলে এত খরচ কোথায় যাচ্ছে?”
কূটনৈতিক অবস্থান না অভ্যন্তরীণ বার্তা?
বাজেট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বড় প্রতিরক্ষা বাজেট শুধু বাহ্যিক প্রস্তুতি নয়, কখনো কখনো অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক শক্তিমানের বার্তাও হতে পারে। আর এতে নাগরিক চাহিদা পিছিয়ে পড়ে। শান্তির সময়ে প্রতিরক্ষা ব্যয় কেবল আধুনিকায়ন নয়, কৌশলগত বার্তাও। তবে দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদার জায়গায় যেন তা প্রভাব না ফেলে এটাই এখন জনমনে প্রধান প্রত্যাশা।