দেশের চামড়া শিল্পের অগ্রদূত ট্যানারি নগরী আজো চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের এক অটুট কেন্দ্রবিন্দু। শ্রমিকদের নিঃশব্দ পরিশ্রম আর আধুনিকীকরণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে চলছে এই শিল্প।
প্রকাশিত : ১৬ জুন ২০২৫, ১:৩১:০১
শ্রমিকের চোখে ট্যানারি নগরী
ট্যানারি এলাকার শ্রমিক মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমাদের কাজ কঠিন, গন্ধ অনেক। কিন্তু এটাই আমাদের জীবন। প্রতিদিন হাজার হাজার চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে আমরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখি।” শ্রমিকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কারখানায় কাটিয়ে দেয়, বাগানে নানা রাসায়নিক মিশ্রণ থেকে শুরু করে শুকানোর কাজ পর্যন্ত। তাঁদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায়, টেকনোলজির উন্নতি ও স্বাস্থ্যবিধি তাদের কাজের পরিবেশকে বদলাতে সাহায্য করেছে, তবে অনেকেই আজও কঠিন পরিশ্রমে নিয়োজিত।
আধুনিকীকরণের ছোঁয়া
বিশ্বের উন্নত চামড়া শিল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার তাগিদে ট্যানারি নগরীতে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি বসানো হচ্ছে। এর ফলে শ্রমিকদের কাজের গতি বেড়েছে, তবে নতুন প্রযুক্তি আয়ত্তে কিছুটা সময় লেগেছে। ইন্ডাস্ট্রি বিশ্লেষক সুমন চক্রবর্তী বলেন, “প্রযুক্তির সঙ্গে দক্ষতা বাড়ানো খুব জরুরি। কারণ আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ না হলে আমরা বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে পারব না।” বিশ্ববাজারের চাহিদা ও পরিবেশগত নিয়মনীতি পালনে আজকের ট্যানারি শ্রমিকরা অনেক বেশি সচেতন। তাঁদের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, যা শ্রমিকদের কর্মক্ষমতাও বাড়িয়েছে।
সমস্যার মোকাবিলা ও ভবিষ্যত প্রস্তুতি
যদিও শ্রমিকদের কাজের পরিবেশে উন্নতি হয়েছে, তবে এখনও রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি, এবং মৌসুমী কর্মীর অধিকার বিষয়গুলো এখনো সমাধান অপেক্ষা করছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. নিশাত আরা বলেন, “ট্যানারি শিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, যাতে শ্রমিক ও স্থানীয় জনগণ দুজনেই সুস্থ থাকতে পারে।” সরকার এবং শিল্প মালিকরা এখন কর্মীদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। শ্রমিকরা নিজেরাও প্রশিক্ষণে আগ্রহী, কারণ আধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্তে তাদের জীবিকা নিশ্চিন্ত হয়।
“ট্যানারি শ্রমিকরা শুধু কারখানায় কাজ করেন না, তারা দেশের অর্থনীতির একটি শক্ত ভিত।” সুমন চক্রবর্তী, শিল্প বিশ্লেষক
ট্যানারি শ্রমিকদের দৈনন্দিন কর্মপরিবেশ ও চ্যালেঞ্জ
শেষ কথা:
ট্যানারি শিল্প নগরীর শ্রমিকরা আজো দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তাঁদের কঠোর পরিশ্রম আর নতুন প্রযুক্তির সংমিশ্রণেই তৈরি হবে আগামী দিনের সাফল্যগাথা। পরিবর্তন ও উন্নয়নের পথে টেকসই পদক্ষেপ নিয়েই এগোতে হবে এই প্রাণবন্ত শিল্পকে।
শ্রমিকদের হাতে দেশ গড়ার স্বপ্ন জড়ানো।