নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে গ্রাম কী
প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৫, ৪:২৬:১০
নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে গ্রাম কী পাচ্ছে প্রাপ্য গুরুত্ব? নাকি শহরের জন্যই সব আয়োজন?
মূল পয়েন্টসমূহ:
- বাজেটে অবকাঠামো উন্নয়নের নাম শহরমুখী পরিকল্পনা
- কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে সংকুচিত বরাদ্দ
- শহরের মেগা প্রকল্পে নজর, গ্রামে মৌলিক চাহিদার সংকট
- তুলনামূলক চিত্র: ভারতের বাজেটে গ্রামীণ বরাদ্দ বাড়ছে
- বিশেষজ্ঞ মত: ‘গ্রাম ছাড়া শহরের উন্নয়ন টেকসই নয়’
"যেখানে ৬৫% মানুষ গ্রামে বাস করে, সেখানে বাজেট শহরের ভাষায় কথা বলে!" ড. মাহফুজা শিরিন, উন্নয়ন বিশ্লেষক
শহরের মেগা প্রকল্প, গ্রামের ক্ষীণ উপস্থিতি
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মেট্রোরেল, উড়ালসড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে শহরকেন্দ্রিক মেগা প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ বেড়েছে প্রায় ১৮%। অথচ গ্রামের জন্য নির্ধারিত কৃষি, পল্লী অবকাঠামো বা স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ প্রায় অপরিবর্তিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে শহর ও গ্রামের উন্নয়ন ভারসাম্যহীন হলে দীর্ঘমেয়াদে সামাজিক বৈষম্য আরও বাড়বে।
গ্রামকে বলা হয় দেশের প্রাণ
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬৫% এখনো গ্রামে বাস করে। তবু বাজেটের ভাষা যেন শহরের ধোলাইখাল থেকে বসুন্ধরা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। দেশের বহু গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ নেই, সড়ক চলাচলের অনুপযোগী, চিকিৎসা-শিক্ষা তো বহু দূরের কথা।
আন্তর্জাতিক তুলনায় পিছিয়ে
ভারতের সাম্প্রতিক বাজেটে গ্রামীণ কৃষি ও পল্লী অবকাঠামোর জন্য বিশেষ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, যা শহর-গ্রামের ভারসাম্য রক্ষায় কার্যকর। ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সেও গ্রামীণ জনজীবনের মান উন্নয়নে বাজেট কাঠামো দিন দিন ভারসাম্যপূর্ণ হচ্ছে। বাংলাদেশ কেন সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছে না, সেটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
রাজনীতি বনাম বাস্তবতা
বিশ্লেষক ড. আলতাফ হোসেন মনে করেন, “শহরের উন্নয়ন দৃশ্যমান, পোস্টারবান্ধব। কিন্তু গ্রামের উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদি ও কম চটকদার। তাই বাজেটে গ্রাম উপেক্ষিত থেকেই যাচ্ছে।” অথচ সঠিক পরিকল্পনায় গ্রামকেও অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতায় রূপান্তর করা সম্ভব।
বাজেট কেবল শহরের রঙিন স্বপ্ন নয়, গ্রামকে অবহেলা করলে দেশব্যাপী উন্নয়ন অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। প্রয়োজন একটা ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট, যেখানে শহর ও গ্রাম উভয়েই থাকবে সমান গুরুত্বপূর্ণ।