মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে যানজট ও দুর্ঘটনা কমানো হচ্ছে।
প্রকাশিত : ১৬ জুন ২০২৫, ১১:৪৭:৫৮
মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বগুড়া রিজিয়নের হাইওয়ে পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টা চলছে। যানজট ও দুর্ঘটনা হ্রাস করে জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে ২৪ ঘণ্টা মাঠে কাজ করছে হাইওয়ে পুলিশ। তবে চালক ও সাধারণ মানুষের অসচেতনতার কারণে এসব প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা এবং প্রাণ হারাচ্ছে অনেক মানুষ।
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। চলতি বছর বগুড়া রিজিয়নের আওতাধীন থানাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রী পরিবহন নিয়ন্ত্রণ, সড়কে পাকিং বন্ধ, স্পিডগান দিয়ে গতিরোধ, ওপেন হাউজ ডে, কমিউনিটি পুলিশিং, পরিবহন মালিক সমিতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক ৩২০টি সভা আয়োজন করেছে তারা। রাতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে টহলও বাড়ানো হয়েছে। মাদক দমনে চেকপোস্ট বসিয়ে ১২২ কেজি গাঁজা, ৭৩ বোতল ফেন্সিডিল, বিদেশি মদ, ৫৫০ বোতল এনার্জি ড্রিংসসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার এবং ১১টি মামলা দিয়ে ১০ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি চোরাচালান রোধে পিকআপ, নিষিদ্ধ পলিথিনসহ ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে।
বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ১০৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০০ জন নিহত ও ৮৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। সর্বশেষ ঈদুল আজহার দিন বগুড়ার নয়মাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত হয়। ঘটনার পর বাসচালককে গ্রেফতার ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে।
দুর্ঘটনা কমাতে হাইওয়ে পুলিশ তিনটি মূল লক্ষ্যের ওপর কাজ করছে: গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, থ্রি-হুইলার নিয়ন্ত্রণ এবং মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ। তারপরও মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, নসিমন-করিমন, সিএনজি, ব্যাটারিচালিত যানবাহন নিয়ম না মেনে চলাচল করছে। অবৈধ পার্কিং, হাটবাজার, দোকানপাট স্থাপন ও যানজট পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে। যাত্রীদের হয়রানিও বাড়ছে।
এছাড়া ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলে ফেরা মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা মাঠে রয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ বগুড়া রিজিয়নের অধীনে পাঁচটি জেলায় (বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর ও রাজশাহী) দায়িত্ব পালন করছে। কুষ্টিয়ার লালনশাহ সেতু পর্যন্তও তাদের কার্যক্রম বিস্তৃত।
হাইওয়ে পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. শহিদ উল্লাহ জানান, সড়ক প্রশস্ত হওয়ার কারণে চালকেরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছে। পথচারীরাও নিয়ম মানছে না। এতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা কমাতে হাইওয়ে পুলিশ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি যেমন ওপেন হাউজ ডে, মাইকিং, কমিউনিটি পুলিশিং, সভা-সেমিনার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চালক, মালিক ও সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে নতুন নতুন কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে।