সামাজিক অন্যায়, নিপীড়ন বা যুদ্ধ সবকিছুর বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হয়
প্রকাশিত : ০১ জুন ২০২৫, ৩:০০:২০
সামাজিক অন্যায়, নিপীড়ন বা যুদ্ধ সবকিছুর বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হয়ে ওঠে কবিতা। শব্দের পেছনে লুকানো থাকে হাজার গল্প, এক একটি ছন্দ যেন তুলির আঁচড়। "শব্দ যখন প্রতিবাদ, তখন কবিতা কেবল রূপ নয়, হয়ে ওঠে শক্তি!" ড. রাহেলা মাহমুদ, সাহিত্য বিশ্লেষক ও শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
জার্মানির বার্টোল্ট ব্রেখট বলেছিলেন, “সকল কবিতাই যদি প্রেমের হতো, তাহলে পৃথিবীর যত রক্ত ঝরেছে, তার কোন দায় থাকত না।” আজও সেই কথা সত্য। আধুনিক বিশ্বের কবিতায় এখন প্রেমের পাশাপাশি উঠে আসছে প্রান্তিকতা, যুদ্ধবিরোধিতা, নিপীড়নের বিরুদ্ধে ক্রোধ। গাজা, ইউক্রেন, বা মায়ানমার কোথাও যখন গর্জে ওঠে যুদ্ধ বা দমনপীড়নের গল্প, তখন বিশ্বজুড়ে তরুণ কবিরা হাতে তুলে নেন কলম। শব্দে গড়ে তোলেন এক চিত্রশালা, যেখানে প্রতিবাদ আছে, বেদনা আছে, আছে মানুষ হয়ে ওঠার গল্প। বাংলাদেশেও সেই ধারা স্পষ্ট। সাম্প্রতিক তরুণ কবি ফারিয়া রহমান লিখেছেন, "চোখের ভেতর গ্রেনেড নয়, আমি রাখব শিশুর ছবি" এই একটি লাইন যেন পুরো এক যুদ্ধের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। বিশ্ব সাহিত্যে ‘পোয়েট্রি অফ রেজিস্ট্যান্স’ এখন একটি স্বীকৃত ঘরানা। আমেরিকার অ্যামান্ডা গোরম্যান থেকে শুরু করে ভারতের মেঘা রাও, সবাই একেকজন শব্দসৈনিক। ড. রাহেলা মাহমুদ বলেন, “যেখানে মিছিল থেমে যায়, সেখান থেকেই শুরু হয় কবিতার আন্দোলন। শব্দের শক্তি দারুণ কার্যকর, কারণ সেটা নীরবতাতেও প্রতিধ্বনি তোলে।” কবিতা এখন আর কেবল বইয়ের পাতা বা সাহিত্যের অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ নয়। সোশ্যাল মিডিয়া, spoken word performance, বা street poetry সব জায়গায় কবিতার প্রতিবাদী কণ্ঠ উঠে আসছে দৃপ্ত ভঙ্গিতে।
শেষ কথা:
"যখন চারপাশে ঘোর অন্ধকার, তখন শব্দই হয়ে ওঠে আলো।" এই সময়ের কবিরা কেবল সৌন্দর্যের কারিগর নন, তারাও একেকজন যোদ্ধা। কবিতা আর নিছক অনুভূতি নয় এখন তা এক ধরণের বিপ্লব।