প্রকাশিত : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭:৫৭
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর সহিংসতার অভিযোগ তুলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিশোধ নিতে দেশটিতে সামরিক হামলার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। নিজের সোশ্যালা মাধ্যমে শনিবার (০১ নভেম্বর) দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প জানান, নাইজেরিয়া সরকার যদি ‘খ্রিস্টান হত্যা’ বন্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে সামরিক অভিযান চালাতে পারে।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমি কেবলই প্রতিরক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি সম্ভাব্য পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিতে। যদি আমরা আঘাত হানি, তা হবে দ্রুত ও নির্মম— ঠিক যেমন ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের প্রিয় খ্রিস্টানদের ওপর হামলা চালায়। সতর্কবার্তা- নাইজেরিয়া সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে!’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে নাইজেরিয়ার প্রতি সকল সহায়তা বন্ধ করবে যদি দেশটি ‘খ্রিস্টান হত্যার অনুমতি’ দিয়ে যায়। ট্রাম্প দাবি করেন, ‘যারা এসব ভয়াবহ নৃশংসতা চালাচ্ছে সেই ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে আমরা হয়তো এখনই সেই কলঙ্কিত দেশে অস্ত্র হাতে প্রবেশ করতে পারি।’
নাইজেরিয়া সরকার তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্পের হুমকির প্রতি কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু এক বিবৃতিতে বলেন, সরকার ধর্ম নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
তিনুবু বলেন, ‘নাইজেরিয়াকে ধর্মীয় অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিত্রায়ণ বাস্তবতার প্রতিফলন নয়। আমাদের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাব, যাতে সব ধর্মের মানুষ নিরাপদে থাকতে পারে।‘
নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিমিয়েবি এবিয়েনফা বলেন, ‘আমরা সব নাগরিককে সুরক্ষা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তা তাদের ধর্ম বা জাতি যাই হোক না কেন। বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তি।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্য কোনো প্রেক্ষাপট ছাড়াই আসেনি। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও কিছু খ্রিস্টান সংগঠন নাইজেরিয়ায় চলমান সহিংসতাকে ‘খ্রিস্টান গণহত্যা’ বলে আখ্যা দিচ্ছে। যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব সহিংসতা মূলত জাতিগত, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘটছে— ধর্মীয় নয়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্স-এর আফ্রিকা বিষয়ক সিনিয়র ফেলো এবেনেজার ওবাদারে বলেন, ‘নাইজেরিয়া সরকারের নিরাপত্তা প্রতিক্রিয়া দুর্বল, এটা সত্যি। কিন্তু সেখানে শুধু খ্রিস্টানই নয় মুসলিম, অমুসলিম, সংশয়বাদী সবাই সহিংসতার শিকার হচ্ছে।‘
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘নাইজেরিয়ায় মার্কিন আগ্রাসন সম্পূর্ণ বিপরীত ফল বয়ে আনবে। বরং এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত নাইজেরিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা।’
তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা